Monday, 29 August 2022

কি চেয়েছিল হঠাৎ গুলিতে নিহত লোকটা?

 


কি চেয়েছিল হঠাৎ গুলিতে নিহত লোকটা?
রাজনীতি মানে ভোট দিতে যাবার দিন
আর রাষ্ট্র মানে ১৫ইআগস্ট জানতো শুধু।
মিছিল দেখতো ছেলেকে কোলে নিয়ে।
কাকা নকশাল করতো বলে সম্পর্ক ছিলনা বাড়ির সাথে,
ওর ও ছিলনা। কথাও বলেনি কোনওদিন।
কি চেয়েছিল হঠাৎ গুলিতে নিহত লোকটা?

একটা ছোট্ট অফিস
ঘরঘরে ফ্যান মাথার ওপর
ছুটিতে একটু দীঘা,ওই বার দুই পুরী...
বিকালে সেলাই করা ব্যাগে সুখের নাম ছিলো ছেলের খেলনা ।
কি চেয়েছিল হঠাৎ গুলিতে নিহত লোকটা?

লক্ষ্মীভান্ডার উল্টে বউ এর সাথে আগামী বর্ষায় 
ছাদ সরানোর স্বপ্ন,
ছেলেকে ইংলিশ মিডিয়াম না হোক,ভালো বাংলা মিডিয়াম বা ভালো প্রাইভেট টিউশনের স্বপ্ন... 
পুজোয় একবার রেস্টুরেন্টে ঢুকে এগ চাউ এর সাথে 
চিলি চিকেন...
তবে হ্যাঁ শীতকালে একবার চিড়িয়াখানায় বাঘ...
কি চেয়েছিল হঠাৎ গুলিতে নিহত লোকটা?

অফিস থেকে আগেই তো মিটে গিয়েছিলো কাজ
বাসটাও একটু ফাঁকা
রাস্তায় ভীড়
ব্যাগে সুখ কিনেছিলো সেদিন
জীবনবীমার একটা কাগজ
হঠাৎ গুলি,হঠাৎ শব্দ,হঠাৎ অন্ধকার...
তারপর ঘুম,অনেকটা ঘুম
একবার বউ আর সুখের উৎস সন্ধান করেছিলো

কি চেয়েছিল হঠাৎ গুলিতে নিহত লোকটা?



Sunday, 14 August 2022

ভারতবর্ষ

 


ব্যরাকপুর স্টেশনে অর্ধউলঙ্গ শুয়ে আছে 
আমার ভারতবর্ষ।
চারপাশে মাছি
বিশ্রী গন্ধ...
পাশ কাটিয়ে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে 
আমার দেশ চলে যাচ্ছে।
একপাশে বিগ্রহ
স্থির নত চোখ
খুচরোর আপেক্ষায়...

দিন সাতেক পরের ঘটনা,
আবার ট্রেন শব্দ করে নামিয়ে দিল ব্যরাকপুর স্টেশন।
আমার দেশ আজও শুয়েই আছে,
ময়লা জামা,ছেঁড়া প্যান্ট দিয়ে উঁকি মারছে যৌনাঙ্গ
চুলে জমে আছে হাজার বছরের ঘৃণা
স্বাধীন রাষ্ট্রের অভুক্ত ক্লেদ।

প্রতিদিন এভাবেই উলঙ্গ হয় আমার দেশ,
ছিঁড়ে যায় জামা,
ময়লা জমে চুলে, নখে।
বিগ্রহ সেজে ওঠে প্রসাদে, প্রণামীতে
ভারতবর্ষ শুয়েই থাকে

একদিন জাগবে বলে...






Sunday, 7 August 2022

একটি ঘেমো গদ্য

 

প্রতিটা ঘামের একটা সুগন্ধ আছে।কালো হাত যেমন একদিকে সাদা,ঠিক তেমন।পিতার ঘামের সুগন্ধ তার সন্তান অনুভব করে।প্রেমিকের ঘামের সুগন্ধে প্রেমিকা খুঁজে নেয় আশ্রয়।কিভাবে সমান্তরাল রেখা আগামীর কাঁটাতার হয়ে যায় তা আমরা দেখি রোজ। কাঁটাতারেও ঘাম লেগে যায় মাঝে মাঝে।ঘামের পদ্য লিখতে লিখতেও সুগন্ধি ঘাম গড়িয়ে পড়েছে কপাল বেয়ে। প্রাচীন সভ্যতা গড়ে নিয়েছিল চাকা।তারপর ঘুরতে ঘুরতে অনেকটা এগিয়ে এখন আবার পিছিয়ে পিছিয়ে আগামীর দিকে(ঘামের দুর্গন্ধ আসছে)। চাঁদের গায়ে ঘামের দাগগুলো স্পষ্ট। বড্ড তীক্ষ্ণ।কয়েক কোটি বছর ধরে মৃদু প্রেম দিতে দিতে ঘেমে নেয়ে একসা।কিন্তু সুগন্ধটা ঠিক বজায় আছে।যেদিন আমাদের পড়ার ইন্দু জেঠু মারা গেল সেদিন জেঠুর শবযাত্রী বন্ধুদের গায়েও ঘামের সুগন্ধ পেয়েছিলাম।ইন্দু জেঠু মানে ইন্দ্রনাথ সরকার।নকশাল ছিলো।খুঁড়িয়ে হাঁটতো। আমি প্রতিদিন ঘামের সুগন্ধ পাই টোটোচালকের বা এসি ঘরে থাকা সেলস এক্সিকিউটিভের।একটা সময় আসে ধীরে ধীরে অনেকের ঘামের সুগন্ধ কমে আসে,আসে দুর্গন্ধ।তীব্র দুর্গন্ধ।লাল বাতিও ঢাকতে পারেনা সেই দুর্গন্ধ। বালিশে তোষকে মিশে থাকে দুর্গন্ধ। আয়নায় মুখ দেখলে ভেসে ওঠে দুর্গন্ধ। পোড়া শহর প্রতিদিন ছড়িয়ে দেয় ছাই,কিন্তু ঘামের সুগন্ধ নিতে জানে সেও।

আমি ঘামের সুগন্ধ নিতে নিতে ঘুমিয়ে পড়ি মাঝরাতে আমার আধ ছেঁড়া কাঁথাটায় ।

নষ্ট চোখ

  রোজ বেচুদার গোলার পাশ দিয়ে যাচ্ছি  আর দাঁড়িয়ে পড়ছি। একটু একটু করে গড়ে উঠছে  মা...  মায়ের হাত পা চোখ...  আমি দেখছি তিলোত্তমার হাত পা ...